কাজী নজরুল ইসলামের বই PDF (All) - Kazi Nazrul islam Books PDF (All)

ব্যথার দান PDF download – Bethar dan Pdf Download by Kazi Nazrul Islam

ব্যাথার দান কাজী নজরুল ইসলাম pdf book Free download

বইয়ের নাম: ব্যথার দান – Byethar Daan

লেখকের নাম: কাজী নজরুল ইসলাম

ধরণঃ সাহিত্য

ক্যাটাগরি: বাংলা কবিতা

ফাইল ফরম্যাট: Pdf free Download(পিডিএফ)

ফাইল সাইজ:  2.09 MB/ মেগাবাইট

প্রকাশনী: আগামী প্রকাশনী

মোট পেজ সংখ্যাঃ  72 পৃষ্ঠা.

বইয়ের সূচিপত্রঃ 

  • ব্যথার দান
  • হেনা 
  • বাদল-বরিষণে
  • ঘুমের ঘোরে
  • অতৃপ্ত কামনা
  • রাজবন্দীর চিঠি 

ব্যাথার দান কাজী নজরুল ইসলাম pdf book Free download

১ম গল্পঃ ব্যথার দান – দারার কথা

গোলেস্তান! অনেক দিন পরে তোমার বুকে ফিরে এসেছি। আহ্‌ মাটির মা আমার, কত ঠাণ্ডা তোমার কোল! আজ শূন্য আঙিনায় দীড়িয়ে প্রথমেই আমার মনে পণ্ড়ছে.জননীর সেই শ্সেহ-বিজড়িত চুম্বন আর অফুরন্ত অমূলক আশঙ্কা, আমায় নিয়ে তার সেই স্নেহের ব্যাকুল বেদন … সেই ঘুম-পাড়ানোর সরল ছড়া, পুম-পাড়ানি মাসী-পিসী ঘুম দিয়ে যেয়ো, বাট ভ’রে পান দেবো গাল ভ’রে খেয়ো।”

আরও মনে পণ্ডুছে আমাদের মা-ছেলের শত অকারণ আদর-আবদার। … সে মা আজ কোথায়?

দু’-একদিন ভাবি, হয়তো মায়ের এই অন্ধ স্নেহটাই আমাকে আমার এই বড়-মা দেশটাকে চিনতে দেয়নি। বেহেশত থেকে-আব্দারে ছেলের কান্না মা শুনুতে পাচ্ছেন কি-না জানি নে, কিন্ত এ আমি নিশ্চয় করে ব’লতে পারি যে, মাকে হারিয়েছি বলেই আজ মা’র চেয়েও মহীয়সী আমার জন্মভুমিকে চিনতে পেরেছি। তবে এও আমাকে স্বীকার ক’রতে হবে, মাকে আগে আমার প্রাণভরা শ্দ্ধা-ভক্তি-ভালবাসা অন্তরের অন্তর থেকে দিয়েই আজ মা’র চেয়েও বড় জন্মভূমিকে ভালবাসতে শিখেছি। মাকে আমি ছোট ক’রছি নে। ধ’রতে গেলে মা-ই বড়। ভালবাসতে শিখিয়েছেন তো মা। আমার প্রাণে শ্নেহের সুরধুনি বইয়েছেন তো মা! আমাকে কাজে-অকাজে এমন ক’রে সাড়া দিতে শিখিয়েছেন যে মা! মা পথ দেখিয়েছেন, আর আমি চ*লেছি সেই পথ ধ’রে। লোকে ভাবছে, কী খামখেয়ালী পাগল আমি! কী কীটা-ভরা ধ্বংসের পথে চ*লেছি আমি! কিন্তু আমার চলার খবর মা জানতেন, আর সে-কথা শুধু আমি জানি।

আমায় লোকে ঘৃণা ক’রছেঃ আহা, আমি এ তো চাই। তবে একটা দিন আসবেই সে-দিন লোকে আমার সঠিক খবর জানতে পেরে দু’-ফৌটা সমবেদনার অশ্রু ফেলবেই ফেলবে । কিন্তু আমি হয়তো তা আর দেখতে পাব না। আর তা দেখে অভিমানী স্নেহ- বঞ্চিতের মত আমার ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না আসবে না । সে-দিন হয়তো আমি থাক্ব দুঃখ-কান্নার সুদূর পারে।

আচ্ছা মা! তুমি তো ম’রে শান্তি পেয়েছ, কিন্তু এ কী অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে গেলে আমার প্রাণে? আমি চিরদিনই ব’লেছি, না-না-না, আমি এ-পাপের বোঝা বইতে পারব ,না; কিন্তু তা তুমি শুনলে কই? সে-কথা শুধু হেসেই উড়িয়ে দিলে, যেন আমার মনের কথা স্ব জানো আর কী… এই যে বেদৌরাকে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে গেলে, এর জন্যে দায়ী কে? এখন যে আমার সকল কাজেই বাধা! কোথাও পালিয়েও টিকতে পারছি নে! … আমি আজ বুঝতে পারছি মা, যে, আমার এই ঘর-ছাড়া উদাস মনটার স্থিতির জন্যেই তোমার চির-বিদায়ের দিনে এই পুস্প-শিকলটা নিজের হাতে আমায় পরিয়ে গিয়েছ। এ মালাই তো হয়েছে আমার জ্বালা। লোহার শিকল ছিন্ন ক’রবার ক্ষমতা আমার আছে, কিন্তু ফুলের শিকল দ’লে যাবার মত নির্মম শক্তি তো নেই আমার । __যা কঠোর, তার ওপর কঠোরতা সহজেই আসে; কিন্তু যা কোমল পেলব নমনীয় , তাকে আঘাত ক’রবে কে? তারই আঘাত যে আর সইতে পারছি নে।

হতভাগিনী বেদৌরা! সে কথা মনে পড়ে_€সই মায়ের শেষ দিন? __সেই নিদারুণ দিনটা? মায়ের শিয়রে মরণের দূত ম্লান মুখে অপেক্ষা ক’রছে__বেদনাপুত তার মুখে একটা নির্বিকার তৃপ্তির আবছায়া ক্রমেই ঘনিয়ে আসছে, __জীবনের শেষ রুধিরটুকু অশ্রু হ’য়ে তোমার আর আমার মঙ্গলেচ্ছায় আমাদেরই আনত শিরে চুইয়ে পণ্ড়ছে। মা’র পৃত সে শেষের অশ্রু বেদনায় যেমন উত্তপ্ত, শান্ত ন্নেহ-ভরা আশিসে তেমনই ন্নিপ্-শীতল। তোমার অযতনে-থোওয়া কালো কৌক্ড়া কেশের রাশ আমাকে সুদ্ধ বেঁপে দিয়েছে, আর তার অনেকগুলো আমাদেরই অশ্রু-_জলে সিক্ত হ’য়ে আমার হাতে-গলায় জড়িয়ে গিয়েছে, __আমার হাতের ওপর কচি পাতার মত তোমার কোমল হাতদু”টি থুয়ে মা অশ্রুজড়িত কণ্ঠে আদশে ক’রছেন, __“দারা, প্রতিজ্ঞা কর্‌, বেদৌরাকে কখনো ছাড়বি নে!”

তার পর তীর শেষের কথাগুলো আরও জড়িয়ে ভারী হ’য়ে এল, __ “এর আর কেউ নেই যে বাপ! এই অনাথা মেয়েটাকে যে আমিই এত আদুরে আর অভিমানী ক’রে ফেলেছি।” . সে কী ব্যথিত-ব্যাকুল আদেশ, গতীর স্নেহের সে কী নিশ্চিন্ত নির্ভরতা!

তার পরে মনে পড়ে বেদৌরা, আমাদের সেই কিশোর মর্মতলে একটু একটু ক’রে ভালবাসার গভীর দাগ, গাঢ় অরুণিমা |… মুখোমুখী বসে থেকেও হৃদয়ের সেই আকুল

কান্না, মনে পড়ে; কী সে-সব বেদৌরা? তখন আপনি মনে হ’ত, এই পাওয়ার ব্যথাটাই হচ্ছে সবচেয়ে অকুভ্তদ। তা না হ’লে সাঁঝের মৌন আকাশতলে দু’জনে যখন গোলেস্তানের আঙুর-বাগিচায় গিয়ে হাসতে হাসতে ব’সতাম, তখন কেন আমাদের মুখের হাসি এক নিমিষে শুকিয়ে গিয়ে দুইটি প্রাণ গভীর পবিত্র নীরবতায় ভ’রে উঠত? তখনও কেন অবুঝ বেদনায় আমাদের বুক মুহুমু্ু কেপে উঠত? আখির পাতায় পাতায় অশ্রু-শীকর ঘনিয়ে আসত? __

আজ সেটা খুব বেশী ক’রেই বুঝতে পেরেছি বেদৌরা । কেননা, এই-যে জীবনের অনেকগুলো দিন তোমার বিরহে কেটে গেল। 

Bethar dan Pdf Download by Kazi Nazrul Islam pdf free download link: 

Download (link 1)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!