charyapada pdf book free download - চর্যাপদ কবিতা pdf - চর্যাগীতি পদাবলী pdf - চর্যাপদ প্রশ্ন উত্তর - চর্যাপদের সমাজচিত্র pdf - চর্যাপদের পদকর্তা কতজন - চর্যাগীতি পরিক্রমা pdf - চর্যাপদের সমাজজীবন pdf - চর্যাপদের সাহিত্যিক মূল্য বিচার করো
Book - বই | চর্যাপদ |
Author | হরপ্রসাদ শাস্ত্রী |
Translator | অতীন্দ্র মজুমদার |
Editor | আনিসুর রহমান (ঢা.বি.) |
Publisher | জ্ঞানের আলো |
Edition | 2019 |
Number of Pages | 120 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
চর্যাপদের বিষয়বস্তু
চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন , মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শ্রাস্ত্রীর একান্ত পরিশ্রমে আবিষ্কৃত এই সাড়ে ছেচল্লিশটি পদ যুক্ত পুথি , বাংলা ভাষাভাষী লোকের কাছে এক আশ্চর্য সম্পদ । উল্লেখযোগ্য সকল পদ ই মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন ও আচার ব্যবহারকে কেন্দ্র করে রচিত । পুঁথির সর্বোচ্চ পদকর্তার নাম কাহ্নপা, তাছাড়া মোট ছাব্বিশ জন পদকর্তার নাম এখানে পাওয়া যায়
বাংলা কাব্যের উজ্জ্বলতম জ্যোতিষ্ক চর্যাপদ। কিন্তু সাধারণ পাঠকের অাগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এই গীতি সমষ্টি খুব একটা অাশাব্যঞ্জক নয়।হয়তো অনেকে ইহাকে ধর্মগ্রন্থের অংশ রূপে জ্ঞান করেন নতুবা ইতিহাসের সাথে তুলে ধরেন। কিন্তু চর্যাপদ তো বাংলা গীতি কাব্যের অাদি রূপ। সেইজন্য চর্যাপদের কাব্য দিক নিয়ে ভাববার অবকাশ অাছে, অালোচনার দরকার অাছে। বইটিতে লেখক অতীন্দ্র মজুমদার মূলত চর্যাপদের অাধ্যত্মিক বা ভাষাগত দিক ছাড়াও কাব্য দিকগুলো নিয়ে অালোচনা করেছেন। চর্যাপদের বাক্যগুলোর নানা দিক বিশ্লেষণ করেছেন। চর্যাপদকে প্রাচীণ অার কাঠখোট্টা যারা ভেবে থাকেন তাদের জন্য সহজ ভাষায় বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে চর্যাপদের ভেতরে কত গভীর সুমধুর নির্জাস করেছে।
চর্যাপদ হলো বাংলা ভাষার প্রাচীনতম পদ সংকলন তথা সাহিত্য নিদর্শন। খ্রিষ্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত গীতিপদাবলির রচয়িতারা ছিলেন সহজিয়া বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ। বাংলা সাধন সংগীত শাখাটির সূত্রপাতও হয়েছিলো এই চর্যাপদ থেকেই। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থশালা থেকে চর্যার একটি খণ্ডিত পুঁথি উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চর্যাপদের সঙ্গে বাংলা ভাষার অনস্বীকার্য যোগসূত্র বৈজ্ঞানিক যুক্তিসহ প্রতিষ্ঠিত করেন। চর্যাপদের প্রধান কবিগণ হলেন লুইপাদ, কাহ্নপাদ, ভুসুকুপাদ, শবরপাদ প্রমুখ।
প্রতিটি ভাষারই একটা অাদি রূপ থাকে। এক হাজার বছর অাগে যেভাবে বাংলা বলা লেখা হতো এখন সেভাবে হয় না, ইংরেজিও তাই, বা যে কোন ভাষা। উদাহরণ সরূপ বলা যায় ইংরেজি সাহিত্যের জনক হিসাবে খ্যাত চসার। যার বিখ্যাত লেখা The Canterbury Tales. সেখানে যেভাবে যে সব শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তার সাথে বর্তমান ইংরেজির মিল নেই বললেই চলে। তেমনি বাংলা প্রাচীণ কাব্য এই চর্যাপদ যে ভাবে লেখা হয়েছে তার সাথে বর্তমান লেখার মিল নেই। তাই একে কাঠখোট্টা লাগবে, কিন্তু এর পাঠোদ্ধার করা হয়েছে। সহজ বাংলায় পড়ে দেখেন কি দারুণ সব কথা বলা হয়েছে। যে সমস্ত পাঠক একবার এইসব পুরনো পুঁথির রস অাচ্ছাদন করতে পেরেছেন, সে বারবার ফিরে খোঁজে এইসব বই গুলোকে। কোন হালকা লেখায় অার সে সন্তুষ্ট হতে পারে না। এইসব পুরনো বিষয় যদি পছন্দের হয়ে থাকে, ভাবছেন কিভাবে ভালো লাগবে? কেন ভালো লাগবে তা সব জানতে এই বইটি পড়ে দেখতে পারেন।
অামি খুব একটা কাব্য রসিক নয়। প্রবন্ধ বা উপন্যাসের তুলনায় কবিতা খুব কম পড়া হয়েছে। শেলী, মিল্টন প্রচন্ড ভাবে টানে, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ খুব পছন্দের। বিভিন্ন সময়ে চর্যাপদের বিভিন্ন পদ পড়া হয়েছে। অবশ্য মূল পদের সাথে ব্যাখ্যা অার বর্তমান শব্দে পড়া। কিন্তু খুব একটা রিলেট করতে পারেনি, ঐ যে কাব্য জ্ঞান কম। তবে এই বইয়ের বিশ্লেষণ নিজের মনের ভাবনার চোখ খুলে দিয়েছে। যা ভবিষ্যতে চর্যাপদ পাঠে সহায়ক হবে বলে মনে করি।
বইটিতে কোন বিষয়গুলো নিয়ে ব্যাখ্যা করা অাছে তা বলে লেখাটা শেষ করা যাক। প্রথমে চর্যাপদের প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয়েছে। এবং ভাষাগত দিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যা অন্য সব লেখকের মতো সাধারণ বা মূল তথ্যে একই। এরপর চর্যাপদের লৌকিক জগৎ এবং সাহিত্য মূল্য নিয়ে অালোচনা করা হয়েছে। যা অামার খুব ভালো লেগেছে। তবে সত্যি কথা বলতে চর্যাপদ নিয়ে যে অাহামরি জ্ঞান অাছে তা নয়, কিন্তু অামি চর্যাপদ নিয়ে নতুন কিছু ভাববার খোঁড়াক পেয়েছি। চর্যাপদের ভেতর বৌদ্ধ সাহিত্যের কিছু ভাবধারা পাওয়া যায়। অার ধরা হয়ে থাকে দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী প্রায় দুইশো বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পন্ডিত এই চর্যাপদের পদগুলো রচনা করেছেন। তো স্বাভাবিক ভাবে ধরে নেওয়া যায় যে ঐ সময়ের বিশেষ বিশেষ ঘটনাও এই চরনায় স্থান পাবে, বিভিন্ন প্রভাব এই রচনাকে প্রভাবিত করবে। এই সব বিষয় নিয়ে নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে।
চর্যাপদ কে কবে অাবিষ্কার করেছে? কোন কবি কোন পদ রচনা করেছেন? বা সবথেকে বেশী পদ কার? এই সবকিছুর সাথে চর্যাপদের কাব্য রসও মানুষ অাচ্ছাদন করুক। বাংলার সাধারণ পাঠক জানুক বাংলার প্রাচীণ কাব্য সাহিত্যকে।
বইঃ চর্যাপদ pdf
লেখকঃ অতীন্দ্র মজুমদার
প্রকাশনীঃ নয়া প্রকাশ, কলকাতা
মূল্যঃ সত্তর টাকা (১৯৯৯ সংস্কার)
0 Comments: