Others PDF Booksহুমায়ূন আহমেদ এর বই সমূহ তালিকা PDF (All Books)

নীল অপরাজিতা হুমায়ূন আহমেদ pdf || nil oporajita pdf

Nil oporajita by humayun ahmed pdf free

 

ইঃ নীল অপরাজিতা 
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
ক্যাটাগরি: উপন্যাস(uponnash)
মোট পেজ: ৭০ পৃষ্ঠা
ফাইল ফরম্যাট: Pdf
file সাইজ: ১৩ এম্বি

নীল অপরাজিতা রিভিউ

বলা হয়ে থাকে- কবিতা কখনো সচেতনভাবে লেখা যায়না, কবিতা হয়ে যায়। রোম্যান্টিকরা তো অহরহই বলেন- কবিতার জন্ম হয় স্বর্গে! কবিতার মতন গদ্য’র এমন সোনার চামচের ভাগ্য হয়না। প্রতিভাবানদের ব্যাপার আলাদা, বাকীদের জন্য উপন্যাস দাড় করানোর ব্যাপারটি ভীষণ খাটুনির। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই লেখক তার তার নিজ জীবনের ছোট ছোট ছবিগুলো স্মৃতিতে সাজিয়ে নেন, তারপর সেগুলোকেই কল্পনার রঙে মাখিয়ে সাদা কাগজে সেঁটে সেঁটে বানিয়ে ফেলেন আস্ত একটা উপন্যাস।
 
 নীল অপরাজিতা উপন্যাসটিতে ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদের নিজ জীবনের ছাপ কতটা এসেছে, এ নিয়ে পাঠক-সমালোচকদের মাঝে ব্যাপক মতবাদ-বিশ্লেষণ রয়েছে। তবে স্রেফ সাহিত্যকর্ম দিয়ে একজন সাহিত্যিককে পুরোপুরিভাবে পরিমাপ করার যে প্রবণতাটি পাঠক সমাজে প্রচলিত আছে, সেটি দিনের শেষে কারোর জন্যই মঙ্গল ডেকে আনেনা।
 
গল্পের শুরুতে মূল চরিত্র শওকত সাহেবকে (গল্পে শওকত সাহেব একজন জনপ্রিয় লেখক) দেখা যায় ঠাকরকোনা নামক এক অখ্যাত রেলস্টেশনে নামতে। স্টেশনে নেমেই শওকত সাহেব একপ্রকার হুড়োহুড়ির মাঝে পড়ে গেলেন। ময়নাতলা হাইস্কুলের এসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার মোফাজ্জল করিম সাহেব স্টেশনে বলতে গেলে হুলস্থূলই বাঁধিয়ে দিলেন। এর মাঝে শওকত সাহেব লেখকের দৃষ্টিতে সেই মফস্বলীয় রেলস্টেশনটিকেই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে নিলেন। বছরের পর বছর ধরে এরকম অখ্যাত রেলস্টেশনগুলো নিতান্ত অবহেলায় পড়ে থাকে। এ গল্পের অনেক পাঠক ও হয়তো এমন একটি স্টেশন দিয়ে নিয়মিত যাওয়া আসা করেন, কিন্তু আগ্রহ নিয়ে স্টেশনটিকে কখনো খেয়াল করেননা। নিরুৎসাহী ধরনের সেই একই ব্যক্তিই কিন্তু এ গল্পের শুরুতে ঠাকরকোনা স্টেশনটিকে খুব আগ্রহ নিয়ে দেখতে চাইবেন, শিরীষগাছের অন্যান্য ডাল ফাঁকা রেখে কেবল একটি ডালেই কেন সব কাকেরা আশ্রয় নেয়- এই ভেবে মাথা গরম করে ফেলবেন। থিকথিকে কাঁদায় ভরা বর্ষার পথঘাট কিংবা ক্লান্তিকর দীর্ঘ নৌকাযাত্রা- কোনটিতেই শওকত সাহেব ততোটা উদ্বিগ্ন হলেননা, যতোটা হলেন করিম সাহেবের আলাপী স্বভাবের কারনে।
 
 মোফাজ্জল করিমের মত স্বল্পবুদ্ধির ভালোমানুষগুলোর চরিত্র অংকনে হুমায়ূন আহমেদ বরাবরই অদ্বিতীয়। কোন একটি চরিত্রকে জীবন্ত করে ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে হুমায়ূন আহমেদের নিজস্ব কিছু ধরন ছিল। এ গল্পে লেখক খুব সুক্ষ্মভাবে করিম সাহেবের মুখোমুখি আরেকটি বিপরীত ধরনের চরিত্র দাড় করিয়ে দিয়েছেন- সে চরিত্রটি শওকত সাহেবের। করিম সাহেবের সারল্য, বাচালতা কিংবা নির্বুদ্ধিতায় যতবার শওকত সাহেব বিব্রত হয়েছেন- ঠিক ততবারই তার সাথে সাথে পাঠকও একই ভাবে বিব্রতভাবটি অনুভব করেছে।
 
একদিক দিয়ে হুমায়ূন আহমেদ বর্তমান সময়ের অন্যান্য লেখকদের চেয়ে যে সুবিধাটি বেশি পেয়েছেন- সেটি হচ্ছে চিঠির ব্যবহার। বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তাঁর উপন্যাসে চিঠির ব্যবহার দেখা গেছে। সরল আর ব্যক্তিগত ভাষায় লেখা এসব চিঠিই খুব সাবলীলভাবে তাঁর গল্পের দুটি দৃশ্যের মাঝে সংযোগ ঘটিয়ে দিত। ষ্টেশনের চিরচেনা দৃশ্যের পর গল্পে ঢুকতে লেখক এ পর্যায়েও চিঠির ব্যবহার করেছেন। ঝরঝরে ভাষায় লেখা দেড় পৃষ্ঠার এই ব্যক্তিগত চিঠিটি পড়ে পাঠক স্ত্রী রেনুর সাথে শওকত সাহেবের সুক্ষ দূরত্বটি অনুভব করতে পারবে। সংসার নামক সমুদ্রে অজস্র ঝড়ঝাপটায় বিপর্যস্ত মানুষ ধীরে ধীরে নিঃস্পৃহ ধরনের হয়ে পড়ে। নিজের চারপাশে সীমানা প্রাচীর দিয়ে গড়ে তুলে পৃথক পৃথক দ্বীপ। নিজস্ব সে দ্বীপে ক্লান্তিকর দিনযাপনের এক পর্যায়ে মানুষ স্বেচ্ছা নির্বাসনে যেতে চায়, চায় দূরে কোথাও গিয়ে সবকিছু কিছুদিন ভুলে থাকতে। নানান সমস্যায় বেশীরভাগ মানুষ সেটা পারেনা। এ গল্পে লেখকও সেরকম স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান। 
 
খুব স্বাভাবিকভাবেই অতৃপ্ত পাঠকরা লেখকের পিছু নিয়ে পৌঁছে যাবে বর্ষা মন্দিরের টানা বারান্দায়, দূর থেকে সোহাগী নদী আদুরে ভঙ্গীতে কাছে ডাকবে- শুরু হয়ে যাবে অভূতপূর্ব এক প্রেমগাঁথার।
 
তবে “নীল অপরাজিতা’ উপন্যাসে লেখক যেন অনেকটা ইচ্ছে করেই শওকত সাহেবের চরিত্রে কিছুটা অহংকার মিশিয়ে দিয়েছেন। গল্পের বিভিন্ন পর্যায়ে শওকত সাহেবকে দেখা গেছে করিম সাহেবের সারল্য কিংবা নির্বুদ্ধিতায় বিরক্ত হতে কিংবা করিম সাহেবের অষ্টাদশী কন্যা পুস্প’র সাথে বুদ্ধির লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে। লেখকরা কাজ করেন মানুষের সুক্ষ অনুভূতি নিয়ে, যেখানে সাধারণ মানুষের দিনপাত করে রুটিরুজি কিংবা সংসারের নানান অন্বেষণে। যে কারনে সাধারন মানুষের গতানুগতিক দিনযাপন কিংবা বুদ্ধিবৃত্তির উপর লেখকদের একটা অবজ্ঞার ভাব আসতেই পারে। তবে নিজেকে শ্রেষ্ঠতর ভাবলেও একজন লেখককে কিন্তু শেষমেশ ফিরে আসতে হয় সাধারণ মানুষদের কাছেই।
 
 গভীর রাতে স্বপ্নদৃশ্যে তাই পুষ্পকে দেখা যায় শওকত সাহেবের কক্ষে এসে বসতে। সত্যি কথা বলতে- শওকত সাহেবই অবচেতনভাবে পুষ্পকে ডেকে আনলেন তাঁর ঘরে। খোলাসা করে কিছুই বলা হলনা, তবে পাঠক টের পায়- খুব গভীরে সন্তর্পণে ডানা ঝাপটাতে শুরু করেছে ভালো লাগার অনুভূতিরা। গল্প নিজ গতিতে এগুতে থাকে। শওকত সাহেব এর মাঝে গ্রামের পথে ঘাটে বেশ ঘোরাঘুরি করে বেড়ালেন, বৃষ্টিতে ভিজে জর বাঁধালেন, থানার ওসি সাহেবের বাসায় নিমন্ত্রণ খেতে গিয়ে কাতল মাছের মাথা থালায় সাজিয়ে ছবিও তুললেন। গল্পের এ পর্যায়ে কাহিনীতে মোড় আনার প্রয়োজন হতেই আনা হল বাবুকে। খুব ছোট একটি চরিত্র, কিন্তু এই ছোট পরিসরেই বাবুর অত্যাচারে শওকত সাহেব রীতিমত হাঁপিয়ে উঠলেন। 
 
শওকত সাহেব পুষ্পকে কেন বর্ষার কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়েছিলেন- সে সম্পর্কে ভাষা ভাষা একটা ধারণা করা যেতে পারে। কিন্তু ঠিক কি কারনে পুস্প বাবুকে খবর দিয়ে গ্রামে আনিয়েছিল- সে সম্পর্কে ভাবতে বসলে পুরো রাত উজাড় হয়ে যাবে। নারী হৃদয়ের রহস্য উদ্ঘাটনে নাকি পৃথিবীর তাবৎ দার্শনিক আর মনিষীরা নাকানি চোবানি খেয়ে বসেছেন, আমারও বোধহয় এ প্রসঙ্গে খুব বেশি মাথা ঘামানো সমীচীন হবেনা। 
 

নীল অপরাজিতা pdf ডাউনলোড bangla

গল্পের শেষটা জোড়া দেবার জন্য আবার চিঠির সাহায্য নেওয়া হল। চিঠিটি লেখার সময়ই শওকত সাহেব আবিষ্কার করলেন- রেণুর কাছে তাঁর মূল ডিজাইনের অর্ধেকটা নেই, কখনো ছিলওনা। গল্পের শেষ দৃশ্যটি বর্ষণের। তুমুল বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে শওকত সাহেব ভাবেন- মানুষ তার জীবনের অধিকাংশ সাধই পূর্ণ করতে পারেনা। হৃদয়ের কোন বন্ধন নেই- তবু তো মানুষকে দিন শেষে ঘরে ফিরতে হয়। কখনো কখনো মূল ডিজাইনের সাথে মিলে গেলেও ভালো লাগার মানুষটিকে সরিয়ে রাখতে হয় যোজন দূরত্বে। হৃদয়ের বাকি অর্ধেকটা নিয়ে পুষ্পরা নিঃসঙ্গ দাড়িয়ে থাকে, সোহাগী নদীর তীরে ….

neel oporajita quotes

বইয়ের ভালো লাগা উক্তিগুলোঃ
১.

মানুষ হচ্ছে আয়নার মত। ভালোবাসার আলো সেই আয়নায় পড়লে ফিরে আসবেই।

২.

বেআক্কেল ধরণের এবং অতিরিক্ত উৎসাহী , দুটা জিনিসই খুব বিপদজনক।

৩.”

শহরের সাথে গ্রামের এই বুঝি পার্থক্য। শহরে দৃষ্টি আটকে যায়। গ্রামে যায় না

৪.

“ঘুঘু নামের এই বিচিত্র পাখি সকালে বা সন্ধ্যায় কেন ডাকে না ? বেছে বেছে ক্লান্ত দুপুরে ডেকে দুপুরগুলি অন্য রকম করে দেয়।’

৫.

‘Absolute Beauty’ সহ্য করা মানুষের পক্ষে খুবই কঠিন।

৬.

“By pains men come to greater pains.



বড় হবার জন্যে মানুষকে নানা ধরনের কষ্ট করতে হয়। তারপর দেখা যায় তার জন্যে আরো বড় কষ্ট অপেক্ষা করছে “

pdf link

নীল অপরাজিতা pdf : click here

 
নীল অপরাজিতা Pdf

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!